Bhagavatam,Srimad Bhagavatam, Bhagavata Purana, Srimad Bhagavatam in Bengali,
Bhagavata Purana in Bengali, Bhagavata Mahapurana, Sanatana Dharma,
Bhagavata Mahapurana, Srimad Bhagavatam Bangla, Gita, শ্রীমদ্ ভাগবতম,
শ্রীমদ্ ভাগবত মহাপুরান, শ্রীমদ্ ভাগবত পুরান, Srimad Bhagavatam online, শ্রীমদ ভাগবত, শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় ,ভক্তির দুঃখ দূর করার জন্য দেবর্ষি নারদের উদ্যোগ, Srimad Bhagavatam Mahatmyam Chapter 2
প্রিয় ভক্তবৃন্দ এবং সুধীগণ,
পূর্ববর্তী লেখনীতে আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যের প্রথম অধ্যায়-দেবর্ষি নারদের ভক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকার সম্পর্কে জেনেছিলাম । আজ আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যের দ্বিতীয় অধ্যায়, ভক্তিদেবীর দুঃখ দূর করার জন্য দেবর্ষি নারদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানবো । এটি শুরু হয় নিচে বর্ণিত দেবর্ষি নারদের সাথে ভক্তিদেবীর কথোপকথনের মাধ্যমে ।
১) নারদ বললেন - হে সাধ্বী ! তুমি কেনই বা বৃথা দুঃখ করছ ? আর বৃথা এতো চিন্তিতই বা কেন হচ্ছো ? সচ্চিদানন্দস্বরূপ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রের পাবন চরণকমলের ধ্যান করো , তার কৃপামাত্রই তোমার সকল দুঃখের পরিসমাপ্তি হবে ।
২) যিনি দুরাচারী কৌরবগণের অত্যাচার থেকে দ্রৌপদীকে রক্ষা করেছিলেন, যিনি সাহচর্য দিয়ে গোপাঙ্গনাদের আশ্রয়প্রদান করেছিলেন, সেই করুনাময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র তো অন্য কোথাও চলে যাননি !
৩) আর তুমি তো স্বয়ং ভক্তিদেবী এবং সর্বদাই ভগবানের প্রানধিকা , তোমার আহ্বানমাত্রই তিনি নীচ থেকে নীচতর ঘরেও ছুটে আসেন ।
৪) পূর্বের তিন যুগ সত্য, ত্রেতা, আর দ্বাপরে জ্ঞান আর বৈরাগ্য ছিল মুক্তির সাধন, কিন্তু এই কালরূপী কলিযুগে তো কেবল ভক্তিই ব্রহ্মসাযুজ্য বা মোক্ষ প্রদানকারী ।
৫) এই অভিলাষেই সচ্চিদানন্দ চিন্ময়মূর্তি পরমানন্দরূপ জ্ঞানস্বরূপ ভগবান শ্রী হরি তাঁর নিজ সৎস্বরূপে তোমাকে সৃষ্ট করেছেন । তুমি তো সাক্ষাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরমাসুন্দরী প্রিয়া ।
৬) একবার যখন তুমি করজোড়ে ভগবানকে প্রশ্ন করেছিলে যে " আমি কি করবো ?" তখন তোমাকে ভগবান এই নির্দেশই দিয়েছিলেন যে " আমার ভক্তদের পোষণ করো " ।
৭) ভগবানের সেই আদেশ তুমি স্বীকার করেছিলে , তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শ্রীহরি তোমাকে সেবা করবার জন্য মুক্তিকে তোমার দাসীরূপে এবং জ্ঞান ও বৈরাগ্যকে তোমার পুত্র রূপে প্রদান করেন ।
৮) বৈকুন্ঠধামে তুমি তোমার সাক্ষাৎ স্বরূপে ভক্তদের পোষণ করো, এই মর্তলোকে তুমি ভক্তদের পোষণ হেতু কেবলমাত্র ছায়ারূপ ধারণ করে রয়েছো ।
৯) সেই থেকে তুমি জ্ঞান, বৈরাগ্য আর মুক্তিকে সাথে নিয়ে পৃথিবীতে এসেছো , এবং সত্য থেকে দ্বাপর পর্যন্ত তুমি খুবই আনন্দে ছিলে ।
১০) এই ঘোর কলিযুগে তোমার দাসী মুক্তি ভণ্ডামিরূপ রোগে আক্রান্ত হয়ে শীর্ণ হতে লাগলো , তাই তোমারই আদেশে সে অতি শীঘ্রই বৈকুন্ঠলোকে চলে গিয়েছে ।
১১) এই লোকেও কেবলমাত্র তোমার স্মরণমাত্রেই সে উপস্থিত হয় এবং আবার বৈকুন্ঠধামে চলে যায় । কিন্তু জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে তুমি তোমার পুত্রবোধের কারণে নিজের কাছেই রেখেছো ।
১২) তবে এই দুঃসহ কলিযুগে এদের উপেক্ষা হওয়ার কারণবশত তোমার এই দুটি ছেলে উৎসাহহীন এবং বৃদ্ধ হয়ে পড়েছে , কিন্তু তুমি চিন্তা কোরো না , আমি এদের নবজীবন লাভের উপায় চিন্তা করে দেখছি ।
১৩) হে সুমুখী ! কলির মতন কোনো যুগ নেই , এই যুগে আমি প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রতিটি মানুষের মনে তোমাকে প্রতিষ্টা করে দেব ।
১৪) দেখো, অন্য সব ধর্মের নামে প্রচলিত অধর্মকে ( কারণ ধর্ম কেবল একটাই, আর সেটা হলো সনাতন বৈদিক ধৰ্ম , বাকি ধর্মের নামে আজকাল যা যা প্রচলিত আছে সেগুলি সবই অধর্ম, তাই " অন্য সব ধর্ম " শব্দটি এখানে অযৌক্তিক ) দমন করে , ভক্তিবিষয়ক মহোৎসবের আদর বাড়িয়ে আমি যদি এই ভূমন্ডলে তোমার প্রচার না করি তো আমি ভগবান শ্রী হরির দাস নই ।
১৫) যে সকল জীব এই কলিযুগে তোমার সঙ্গে যুক্ত থাকবে , পাপী হলেও তারা নিঃসন্দেহে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভয় ধাম প্রাপ্ত হবে ।
১৬) প্রেমরূপিণী ভক্তি যার হৃদয়ে সততই বিরাজ করে সেই শুদ্ধ অন্তঃকরণ জীব স্বপ্নেও যমরাজকে দর্শন করে না।
১৭) যার হৃদয়ে পরমা ভক্তিদেবীর নিবাস, তাকে প্রেত, পিশাচ, রাক্ষস বা দৈত্যদানব স্পর্শও করতে পারে না ।
১৮) তপস্যা , বেদ অধ্যয়ণ , জ্ঞান ও বৈদিক কর্মাদি এইসকল কোনো সাধনেই ভগবান বশীভূত হন না , ইনি কেবল ভক্তির দ্বারাই বশীভূত হন, গোপাঙ্গনারা এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ ।
১৯) সহস্র জন্মের পুণ্যফলের দ্বারা মানুষের ভক্তিতে অনুরাগ হয় । এই কলিযুগে কেবলি ভক্তি, ভক্তিই সার ,শুধুমাত্র ভক্তির টানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র সামনে এসে দাঁড়ান ।
২০) যে মূঢ় ব্যক্তি ভক্তির প্রতি অবজ্ঞা করে, শত্রুতা করে , এই তিনলোকে তার কেবলি দুঃখ আর দুঃখই প্রাপ্তি হয় । ভক্তকে তিরস্কার করবার জন্য পুরাকালে দুর্বাসা মুনিকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছিল ।
২১) ব্রত , তীর্থপর্যটন, যাগযজ্ঞ, বা জ্ঞানচর্চা প্রভৃতি নানারকম সাধনেরও কোনো আবশ্যকতাই নেই , কেবল ভক্তিই মুক্তি প্রদানকারিনী ।
২২) সূত বললেন - এইভাবে নারদমুনির কাছে নিজের মাহাত্ম্য শ্রবণ করে ভক্তির সর্বাঙ্গই পুষ্টিলাভ করল এবং তিনি নারদমুনিকে বলতে লাগলেন ।
২৩) ভক্তি বললেন - হে নারদমুনি ! আপনি ধন্য , আমার ওপরে আপনার নিশ্চলা প্রীতি রয়েছে । আমি সর্বদাই আপনার হৃদয়ে থাকবো , কখনই আপনাকে ছেড়ে যাবো না ।
২৪) হে সাধু ! আপনি অত্যন্ত কৃপালু । আপনি ক্ষণকালের মধ্যেই আমার সমস্ত দুঃখ দূর করে দিয়েছেন । কিন্তু আমার পুত্রদ্বয়ের অচেতনতা এখনও দূর হল না ; আপনি শীঘ্রই এদের চেতনা ফিরিয়ে দিয়ে এদের জাগিয়ে তুলুন ।
২৫) সূত বললেন - ভক্তির এই কথা শুনে নারদের বড়ই করুনা হল এবং তিনি হাত দিয়ে তাদের অঙ্গমর্দন করে জাগানোর চেষ্টা করলেন ।
২৬) তাদের কর্ণের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে অতি উচ্চস্বরে বললেন , আরে জ্ঞান ! তাড়াতাড়ি জেগে ওঠো ; ওহে বৈরাগ্য ! তাড়াতাড়ি জেগে ওঠো ।
২৭) আবার বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, এবং বার বার গীতাপাঠ করে তাদের জাগালেন , এর ফলে তারা কোনোপ্রকারে নিজের যথাসাধ্য শক্তি প্রয়োগে উঠে দাড়ালো ।
২৮) কিন্তু আলস্যবশত তারা হাই তুলতে লাগল, চোখ খুলতে পারলো না । তাদের কেশ বকের পালকের মতন শুভ্র হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের অঙ্গপ্রতঙ্গ শুকনো কাঠের মতন নিস্তেজ ও শক্ত হয়ে পড়েছিল ।
২৯) ক্ষুধাতৃষ্ণায় কাতর ও অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আবার তাদের ঘুমাতে দেখে নারদমুনির বড়ই চিন্তা হল এবং মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন যে এখন আমি কি করি ?
৩০) এদের এই নিদ্রা এবং তার চাইতেও গুরুতর এদের এই বৃদ্ধাবস্থা কি করে দূর করি ? এইরকম চিন্তা করতে করতে তিনি পরমেশ্বর ভগবান গোবিন্দকে স্মরণ করতে লাগলেন ।
<--পূর্ববর্তী লেখনী পরবর্তী লেখনী-->
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
|| ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ||
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায়
ভক্তির দুঃখ দূর করার জন্য দেবর্ষি নারদের উদ্যোগ
পূর্ববর্তী লেখনীতে আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যের প্রথম অধ্যায়-দেবর্ষি নারদের ভক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকার সম্পর্কে জেনেছিলাম । আজ আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যের দ্বিতীয় অধ্যায়, ভক্তিদেবীর দুঃখ দূর করার জন্য দেবর্ষি নারদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানবো । এটি শুরু হয় নিচে বর্ণিত দেবর্ষি নারদের সাথে ভক্তিদেবীর কথোপকথনের মাধ্যমে ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
১) নারদ বললেন - হে সাধ্বী ! তুমি কেনই বা বৃথা দুঃখ করছ ? আর বৃথা এতো চিন্তিতই বা কেন হচ্ছো ? সচ্চিদানন্দস্বরূপ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রের পাবন চরণকমলের ধ্যান করো , তার কৃপামাত্রই তোমার সকল দুঃখের পরিসমাপ্তি হবে ।
২) যিনি দুরাচারী কৌরবগণের অত্যাচার থেকে দ্রৌপদীকে রক্ষা করেছিলেন, যিনি সাহচর্য দিয়ে গোপাঙ্গনাদের আশ্রয়প্রদান করেছিলেন, সেই করুনাময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র তো অন্য কোথাও চলে যাননি !
৩) আর তুমি তো স্বয়ং ভক্তিদেবী এবং সর্বদাই ভগবানের প্রানধিকা , তোমার আহ্বানমাত্রই তিনি নীচ থেকে নীচতর ঘরেও ছুটে আসেন ।
৪) পূর্বের তিন যুগ সত্য, ত্রেতা, আর দ্বাপরে জ্ঞান আর বৈরাগ্য ছিল মুক্তির সাধন, কিন্তু এই কালরূপী কলিযুগে তো কেবল ভক্তিই ব্রহ্মসাযুজ্য বা মোক্ষ প্রদানকারী ।
৫) এই অভিলাষেই সচ্চিদানন্দ চিন্ময়মূর্তি পরমানন্দরূপ জ্ঞানস্বরূপ ভগবান শ্রী হরি তাঁর নিজ সৎস্বরূপে তোমাকে সৃষ্ট করেছেন । তুমি তো সাক্ষাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরমাসুন্দরী প্রিয়া ।
৬) একবার যখন তুমি করজোড়ে ভগবানকে প্রশ্ন করেছিলে যে " আমি কি করবো ?" তখন তোমাকে ভগবান এই নির্দেশই দিয়েছিলেন যে " আমার ভক্তদের পোষণ করো " ।
৭) ভগবানের সেই আদেশ তুমি স্বীকার করেছিলে , তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শ্রীহরি তোমাকে সেবা করবার জন্য মুক্তিকে তোমার দাসীরূপে এবং জ্ঞান ও বৈরাগ্যকে তোমার পুত্র রূপে প্রদান করেন ।
৮) বৈকুন্ঠধামে তুমি তোমার সাক্ষাৎ স্বরূপে ভক্তদের পোষণ করো, এই মর্তলোকে তুমি ভক্তদের পোষণ হেতু কেবলমাত্র ছায়ারূপ ধারণ করে রয়েছো ।
৯) সেই থেকে তুমি জ্ঞান, বৈরাগ্য আর মুক্তিকে সাথে নিয়ে পৃথিবীতে এসেছো , এবং সত্য থেকে দ্বাপর পর্যন্ত তুমি খুবই আনন্দে ছিলে ।
১০) এই ঘোর কলিযুগে তোমার দাসী মুক্তি ভণ্ডামিরূপ রোগে আক্রান্ত হয়ে শীর্ণ হতে লাগলো , তাই তোমারই আদেশে সে অতি শীঘ্রই বৈকুন্ঠলোকে চলে গিয়েছে ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
১১) এই লোকেও কেবলমাত্র তোমার স্মরণমাত্রেই সে উপস্থিত হয় এবং আবার বৈকুন্ঠধামে চলে যায় । কিন্তু জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে তুমি তোমার পুত্রবোধের কারণে নিজের কাছেই রেখেছো ।
১২) তবে এই দুঃসহ কলিযুগে এদের উপেক্ষা হওয়ার কারণবশত তোমার এই দুটি ছেলে উৎসাহহীন এবং বৃদ্ধ হয়ে পড়েছে , কিন্তু তুমি চিন্তা কোরো না , আমি এদের নবজীবন লাভের উপায় চিন্তা করে দেখছি ।
১৩) হে সুমুখী ! কলির মতন কোনো যুগ নেই , এই যুগে আমি প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রতিটি মানুষের মনে তোমাকে প্রতিষ্টা করে দেব ।
১৪) দেখো, অন্য সব ধর্মের নামে প্রচলিত অধর্মকে ( কারণ ধর্ম কেবল একটাই, আর সেটা হলো সনাতন বৈদিক ধৰ্ম , বাকি ধর্মের নামে আজকাল যা যা প্রচলিত আছে সেগুলি সবই অধর্ম, তাই " অন্য সব ধর্ম " শব্দটি এখানে অযৌক্তিক ) দমন করে , ভক্তিবিষয়ক মহোৎসবের আদর বাড়িয়ে আমি যদি এই ভূমন্ডলে তোমার প্রচার না করি তো আমি ভগবান শ্রী হরির দাস নই ।
১৫) যে সকল জীব এই কলিযুগে তোমার সঙ্গে যুক্ত থাকবে , পাপী হলেও তারা নিঃসন্দেহে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভয় ধাম প্রাপ্ত হবে ।
১৬) প্রেমরূপিণী ভক্তি যার হৃদয়ে সততই বিরাজ করে সেই শুদ্ধ অন্তঃকরণ জীব স্বপ্নেও যমরাজকে দর্শন করে না।
১৭) যার হৃদয়ে পরমা ভক্তিদেবীর নিবাস, তাকে প্রেত, পিশাচ, রাক্ষস বা দৈত্যদানব স্পর্শও করতে পারে না ।
১৮) তপস্যা , বেদ অধ্যয়ণ , জ্ঞান ও বৈদিক কর্মাদি এইসকল কোনো সাধনেই ভগবান বশীভূত হন না , ইনি কেবল ভক্তির দ্বারাই বশীভূত হন, গোপাঙ্গনারা এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ ।
১৯) সহস্র জন্মের পুণ্যফলের দ্বারা মানুষের ভক্তিতে অনুরাগ হয় । এই কলিযুগে কেবলি ভক্তি, ভক্তিই সার ,শুধুমাত্র ভক্তির টানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র সামনে এসে দাঁড়ান ।
২০) যে মূঢ় ব্যক্তি ভক্তির প্রতি অবজ্ঞা করে, শত্রুতা করে , এই তিনলোকে তার কেবলি দুঃখ আর দুঃখই প্রাপ্তি হয় । ভক্তকে তিরস্কার করবার জন্য পুরাকালে দুর্বাসা মুনিকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছিল ।
২১) ব্রত , তীর্থপর্যটন, যাগযজ্ঞ, বা জ্ঞানচর্চা প্রভৃতি নানারকম সাধনেরও কোনো আবশ্যকতাই নেই , কেবল ভক্তিই মুক্তি প্রদানকারিনী ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
২২) সূত বললেন - এইভাবে নারদমুনির কাছে নিজের মাহাত্ম্য শ্রবণ করে ভক্তির সর্বাঙ্গই পুষ্টিলাভ করল এবং তিনি নারদমুনিকে বলতে লাগলেন ।
২৩) ভক্তি বললেন - হে নারদমুনি ! আপনি ধন্য , আমার ওপরে আপনার নিশ্চলা প্রীতি রয়েছে । আমি সর্বদাই আপনার হৃদয়ে থাকবো , কখনই আপনাকে ছেড়ে যাবো না ।
২৪) হে সাধু ! আপনি অত্যন্ত কৃপালু । আপনি ক্ষণকালের মধ্যেই আমার সমস্ত দুঃখ দূর করে দিয়েছেন । কিন্তু আমার পুত্রদ্বয়ের অচেতনতা এখনও দূর হল না ; আপনি শীঘ্রই এদের চেতনা ফিরিয়ে দিয়ে এদের জাগিয়ে তুলুন ।
২৫) সূত বললেন - ভক্তির এই কথা শুনে নারদের বড়ই করুনা হল এবং তিনি হাত দিয়ে তাদের অঙ্গমর্দন করে জাগানোর চেষ্টা করলেন ।
২৬) তাদের কর্ণের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে অতি উচ্চস্বরে বললেন , আরে জ্ঞান ! তাড়াতাড়ি জেগে ওঠো ; ওহে বৈরাগ্য ! তাড়াতাড়ি জেগে ওঠো ।
২৭) আবার বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, এবং বার বার গীতাপাঠ করে তাদের জাগালেন , এর ফলে তারা কোনোপ্রকারে নিজের যথাসাধ্য শক্তি প্রয়োগে উঠে দাড়ালো ।
২৮) কিন্তু আলস্যবশত তারা হাই তুলতে লাগল, চোখ খুলতে পারলো না । তাদের কেশ বকের পালকের মতন শুভ্র হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের অঙ্গপ্রতঙ্গ শুকনো কাঠের মতন নিস্তেজ ও শক্ত হয়ে পড়েছিল ।
২৯) ক্ষুধাতৃষ্ণায় কাতর ও অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আবার তাদের ঘুমাতে দেখে নারদমুনির বড়ই চিন্তা হল এবং মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন যে এখন আমি কি করি ?
৩০) এদের এই নিদ্রা এবং তার চাইতেও গুরুতর এদের এই বৃদ্ধাবস্থা কি করে দূর করি ? এইরকম চিন্তা করতে করতে তিনি পরমেশ্বর ভগবান গোবিন্দকে স্মরণ করতে লাগলেন ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
৩১) এমন সময়ে দৈববাণী হল যে " হে মুনি ! দুঃখ কোরো না , তোমার এই উদ্যোগ নিশ্চয়ই সফল হবে ।
৩২) হে দেবর্ষি ! এই মহৎকার্য সম্পাদনের জন্য আপনি এক সৎকর্মের অনুষ্ঠান করুন । সেই কর্মের কথা সন্তশিরোমনি সাধুগণ আপনাকে বর্ণনা করবেন ।
৩৩) সেই সৎকর্মের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলেই জ্ঞান আর বৈরাগ্যের নিদ্রা এবং বৃদ্ধাবস্থা তৎক্ষণাৎ দূরীভূত হবে এবং সর্বত্র ভক্তির প্রচার হবে ।
৩৪) সেস্থলে উপস্থিত সকলেই এই দৈববাণী শুনতে পেলেন । নারদমুনি এই সব শ্রবণে বড়ই অবাক হলেন এবং আশ্চর্যপ্রকাশ করে বললেন - " এর তো কিছুই আমার সর্বতোভাবে বোধগম্য হল না । "
৩৫) নারদমুনি বললেন যে "এই দৈববানীও অতি গুহ্য এবং গোপনভাবে ব্যক্ত হয়েছে । কি প্রকার সাধন এর দ্বারা এই কার্য সম্পাদন হবে ,এই দৈববাণীতে তা ব্যক্ত হয়নি ।
৩৬) কে জানে সেই সকল সন্তশিরোমনি সাধুগণ কোথায় পাওয়া যাবে আর কি প্রকারেই বা তারা সেই সাধন প্রদান করবেন ? এই দৈববাণী অনুসারে এখন আমারই বা কি করণীয় ?
৩৭) সূত বললেন -হে শৌনক ! তারপর নারদমুনি জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে সেখানে রেখে দৈববাণী কর্তৃক উদ্ধৃত সাধনের খোঁজে প্রস্থান করলেন এবং তীর্থে তীর্থে গিয়ে কিংবা পথমধ্যে মুনীস্বরদের সাথে সাক্ষাৎ হলে তাদের সেই সাধনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন ।
৩৮) যদিও তার সেই প্রশ্ন সকলেই শুনলেন কিন্তু কেউই কোনোপ্রকার সদুত্তর দিতে অসমর্থ হলেন । কেউ বললেন ' এ অসাধ্য ' ; কেউ বললেন ' এর সঠিক বিবরণ দুঃসাধ্য ।' কেউ কেউ শুনে চুপ করে রইলেন , আবার কেউ কেউ নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে প্রস্থান করলেন ।
৩৯-৪০) সমস্ত ত্রিভুবনে এক আশ্চর্য হাহাকার পড়ে গেল । সকলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল - " বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, বারবার গীতাপাঠের দ্বারাও যখন জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে জাগানো গেল না তখন নিশ্চই আর কোনো অন্য উপায় নেই ।"
৪১) ' যা স্বয়ং যোগরাজ দেবর্ষি নারদও জানেন না , সাধারণ সংসারী মানুষ সে সাধনের ব্যাপারে কি ভাবে জানবে ? '
৪২) এই ভাবে যে যে মুনি ঋষির কাছে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো , তাঁরা সকলেই বিবেচনা করে উত্তর দিলেন "এই প্রশ্নের উত্তর বড়ই দুঃসাধ্য ।"
৪৩) দেবর্ষি নারদ তখন অত্যন্ত চিন্তামগ্ন হয়ে বদরিকা অরণ্যে এসে উপস্থিত হলেন । সেখানে বসে তিনি মনস্থির করলেন যে জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে জাগানোর জন্য ' আমি তপস্যা করব । '
৪৪) সেই সময় তিনি সামনে শতকোটি সূর্যের সমান প্রভাময় সনকাদি মুনিস্বরদের দেখতে পেলেন । তাদের দর্শন করে দেবর্ষি নারদ এইরূপ বললেন ।
৪৫) নারদ বললেন - হে মহাত্মাগণ ! আজ আমার বহু ভাগ্যের ফলস্বরূপ আপনাদের সাথে মিলন হল । আপনারা দয়া করে আমাকে সেই সাধন সম্পর্কে শীঘ্রই বলুন ।
৪৬) আপনারা সকলেই মহাযোগী , বুদ্ধিমান এবং বিদ্বান । আপনারা পাঁচ বৎসরের বালকের সমান বলে অনুভূত হলেও আসলে আপনারা কিন্তু পূর্বপুরুষদেরও পূর্বজ ।
৪৭) আপনারা সর্বদাই বৈকুণ্ঠধামে বাস করেন , নিরন্তর হরিগুণগানে মগ্ন থেকে শ্রীভগবৎলীলারস আস্বাদন করে সর্বদা তাতেই মত্ত রয়েছেন এবং একমাত্র ভগবৎকথাই আপনাদের জীবনের আধার ।
৪৮) " হরি শরণম্ " অর্থাৎ ভগবানই আমার রক্ষক , এই মন্ত্র সর্বদাই আপনাদের মুখে রয়েছে , যার প্রভাবে কালপ্রেরিত জরাও আপনাদের স্পর্শমাত্র করতে পারে না ।
৪৯) পূরাকল্পে আপনাদের ভ্রূকুটি মাত্রে ভগবান বিষ্ণুর দ্বারপাল জয় আর বিজয় মুহূর্তের মধ্যে মর্ত্যে পতিত হয় আবার আপনাদেরই কৃপায় তারা পুনরায় বৈকুণ্ঠধাম প্রাপ্ত হন ।
৫০) অহো ! ধন্য আমি , অসীম সৌভাগ্যের ফলেই আজ আপনাদের দর্শন হল । আমি অতীব দীন আর আপনারা স্বভাববতই দয়ালু , সুতরাং আমার উপর আপনাদের অবশ্যই কৃপা করা উচিত ।
৫১) দৈববাণী যা আদেশ করেছেন সেই সাধনটি কি ? কি প্রকারেই বা আমি সেই সাধন সম্পাদন করব ? আপনারা সবিস্তারে সেই ব্যাপারে আমাকে সম্যকরূপে বলুন ।
৫২) ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্য - এদের কিভাবে সুখ প্রাপ্তি হবে ? আর কিভাবেই বা সমস্ত বর্ণের মধ্যে প্রীতি এবং যত্ন সহকারে এদের প্রতিষ্ঠা করা যায় ।
৫৩) সনকাদি মুনিগন বললেন - হে দেবর্ষি ! মনে হর্ষের সঞ্চার করুন , আপনি চিন্তা করবেন না , আপনি যাদের প্রসঙ্গ উদ্ধৃত করলেন, তাদের উদ্ধারহেতু এক অতি সহজ উপায় আগে থেকেই বিদ্যমান ।
৫৪) হে দেবর্ষি নারদ ! আপনি ধন্য ! আপনি বৈরাগীশ্রেষ্ট , পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রের দাসগণের আপনি শ্বাশত পথপ্রদর্শক এবং ভক্তিযোগের ভাস্কর ।
৫৫) পরমা মুক্তিপ্রদানকারী ভক্তির কষ্ট নিবারণের জন্য যে মহৎ উদ্যোগ আপনি করছেন , তা আপনার পক্ষে মোটেও আশ্চর্যজনক ব্যাপার নয়। ভক্তির সংস্থাপনাই তো ভাগবত ভক্তদের সর্বদা করা উচিত ।
৫৬) আর্য মুনি ঋষিগণ এই সংসারে আমাদের জন্য অনেকপ্রকার সাধনমার্গের দৃষ্টান্ত দিয়েছেন , কিন্তু সেই সবগুলিই নিদারুন কষ্টসাধ্য এবং প্রায়শই পরিণামস্বরূপ সেগুলি কেবলমাত্র স্বর্গপ্রাপ্তিরই সহায়ক হয় ।
৫৭) যে সাধনের দ্বারা স্বয়ং ভগবানকে পাওয়া যায় , তা আজ পর্যন্ত কেবল গুপ্তরূপেই থেকে গিয়েছে । কদাচিৎ অতি সৌভাগ্যের উদয় হলে সেই পরম সাধনের উপদেষ্টা পুরুষের প্রাপ্তি হয় ।
৫৮) যে সৎকর্মের ইঙ্গিত আপনি দৈববাণী দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছেন , আমরা এখন আপনাকে তার ব্যাপারে বলছি । আপনি তা অতি প্রসন্নমনে একাগ্রচিত্ত হয়ে শ্রবণ করুন ।
৫৯) হে দেবর্ষি নারদ ! দ্রব্যযজ্ঞ, তপোযজ্ঞ, যোগযজ্ঞ, এবং স্বাধ্যায়স্বরূপ জ্ঞানযজ্ঞ - এগুলির সবই কেবলমাত্র স্বর্গাদিলাভ হেতু কৃতকর্মের ইঙ্গিত বহনকারী ।
৬০) পণ্ডিতগণ স্বাধ্যায়স্বরূপ জ্ঞানযজ্ঞকেই মুক্তিপ্রদানকারী সৎকর্মের সূচকরূপে ব্যক্ত করেছেন । সেই সৎকর্ম হল ভক্তিভরে শ্রীমদ্ভাগবতের পারায়ণ অর্থাৎ নিয়মিত শ্রীমদ্ভাগবতপাঠের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থপাঠ-সমাপ্তি, যার সমাপন শুকদেবাদি মহানুভবগণ পূর্বে করে গিয়েছেন ।
৬১) অমৃত থেকেও উৎকৃষ্ট এই শ্রীমদ্ভগবত এর কর্ণপাত হওয়ামাত্রই ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্যের মহাশক্তি লাভ হবে । যার ফলে জ্ঞান আর বৈরাগ্যের ক্লেশের পরিসমাপ্তি হবে এবং ভক্তিও আনন্দিত হবেন ।
৬২) অরণ্যমধ্যে সিংহের গর্জন শ্রবণমাত্র যেমন নেকড়েরা পলায়ন করে , তেমনি শ্রীমদ্ভাগবতের সিংহনাদে এই ঘোর কলি যুগের সমস্ত দোষের প্রলয় ঘটবে ।
৬৩) তখন এই সংসারে প্রতিটি ঘরে প্রতিটি মানবের হৃদয়ে, প্রেমরসপ্রবাহিনী ভক্তি তার দুই পুত্র জ্ঞান আর বৈরাগ্য সহিত ক্রীড়া করবেন ।
৬৪) দেবর্ষি নারদ বললেন - বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, এমনকি গীতাপাঠের মাধ্যমেও আমি জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে অনেকপ্রকারে জাগাবার চেষ্টা করেছি । কিন্তু এইসব সাধনের পরও জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে জাগানো সম্ভবপর হয়নি ।
৬৫) এমতাবস্থায় শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণের ফলে কিরূপে জেগে উঠবে ? কারণ শ্রীমদ্ভাগবতের প্রতিটি শ্লোক এবং প্রতিটি পদেই তো সেই বেদেরই সারাংশ বর্ণিত হয়েছে ।
৬৬) হে বালমুনিগন , আপনাদের দর্শন অতি দুষ্প্রাপ্য , যা কখনোই ব্যর্থ হয় না এবং আপনারা শরণাগতবৎসল । তাই আপনারা দয়া করে আমার মনের এই সংশয় দূরীভূত করুন ,দয়া করে বিলম্ব করবেন না ।
৬৭) সনকাদিমুনিগন বললেন - শ্রীমদ্ভাগবত বেদ আর উপনিষদেরই সারাংশ । তাই বেদ থেকে পৃথক এবং সাথে তার ফলস্বরূপ হওয়ার দরুন শ্রীমদ্ভাগবত পরম উত্তম বলে পরিগণিত হয় ।
৬৮) বৃক্ষের শিকড় থেকে শুরু করে শাখাপ্রশাখা রসে সিক্ত থাকে কিন্তু ওই অবস্থায় সেই রস আস্বাদন করা সম্ভবপর হয় না ; সেই রসই যখন বৃক্ষের ফলরূপে পরিণত হয় তখন তা সমগ্র সংসারের কাছে প্রিয় হয় ।
৬৯) ঘি তো থাকে দুধেরই মধ্যে, তথাপি দুধের মধ্যে ঘি এর পৃথক স্বাদ পাওয়া যায় না , কিন্তু দুধের থেকে সেই ঘি যখন পৃথক হয়ে যায় , তখন তা দেবতাদেরও স্বাদবর্ধনকারী হয় ।
৭০) শর্করা ইক্ষুর মধ্যে সর্বত্রই ব্যাপ্ত থাকে কিন্তু ইক্ষু থেকে প্রস্তুত শর্করা পৃথক এবং বিশেষরূপে আমাদের মিষ্টতা প্রদান করে থাকে । এই রকমই হল শ্রীমদ্ভাগবত কথা ।
৭১) এই শ্রীমদ্ভাগবতমহাপুরাণ বেদেরই সমান । ভগবানের কলাবতার শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্যের প্রতিষ্ঠার জন্যই ইহা প্রকাশিত করেছেন ।
৭২-৭৩) পুরাকালে বেদবেদান্ত পারঙ্গম এবং গীতশাস্ত্রকার মহর্ষি বেদব্যাস যখন একসময় দুঃখিত হয়ে অজ্ঞানময় অন্ধকারময় সমুদ্রে নিমগ্ন ছিলেন , তখন আপনিই তাঁকে কেবলমাত্র চারটি শ্লোকে এই শ্রীমদ্ভাগবতের উপদেশ দিয়েছিলেন । আপনার সেই উপদেশ শ্রবণেই তার সমস্ত চিন্তা দূরীভূত হয়েছিল ।
৭৪) সুতরাং আপনি এতে অবাকই হচ্ছেন কেন আর সংশয়ই বা কেন প্রকাশ করছেন ? হে দেবর্ষি নারদ ! আপনাকে ভক্তি, জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে এই শোক এবং দুঃখ বিনাশকারী শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণই শ্রবন করানো উচিত ।
৭৫) তখন দেবর্ষি নারদ বললেন - হে মহানুভবগণ ! আপনাদের দর্শনমাত্র জীবের সমস্ত পাপ দূর হয় এবং দুঃখরূপী সংসার দাবানলে তাপিত ব্যক্তির উপর শীঘ্রই শান্তি বর্ষিত হয় । অনন্তনাগের সহস্রমুখনিঃসৃত শ্রীমদ্ভাগবত কথামৃত আপনারা সর্বদাই পান করেন । প্রেমলক্ষণা ভক্তির প্রকাশের উদ্দেশ্যহেতু আমি আপনাদের শ্রীচরণকমল আশ্রয় করছি ।
৭৬) মানুষের বহুজন্মের অর্জিত পুণ্যের উদয় হলে যখন সৎসঙ্গ লাভ হয় , তখন তার অজ্ঞানজনিত মোহ ও দৰ্পরূপ ( মদ/গর্ব ) অন্ধকারের নাশ হয়ে শুভ বিবেক জাগ্রত হয় ।
আসুন আমরা সবাই একসাথে শ্রীমদ্ভাগবতম / শ্রীমদ্ ভাগবত মহাপুরাণের স্বাধ্যায় করে আমাদের জীবন পুন্য করি | আজকের মতো এইটুকুই, আমরা শেষ করব মহামন্ত্র দিয়ে |
যদি আপনার এই পোস্টটি পছন্দ হয়ে থাকে / ভালো লেগে থাকে নতুবা এখান থেকে কিছু নুতন জানতে পারেন তাহলে আমাদের সাবস্ক্রাইব অবশ্যই করবেন এবং আপন আত্মীয়পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন | আমার লেখা কেমন লাগলো তা অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে কমেন্ট করে জানাবেন |
শ্রীমদ্ ভগবত গীতার উপর আমাদের টিউটোরিয়াল / শিক্ষামূলক সিরিজ পড়ার জন্য এই লিংকটি ক্লিক করে শ্রীমদ ভগবত গীতার অমৃতজ্ঞান পান করে জীবন পবিত্র ও পুন্য করুন |
শ্রীমদ্ ভগবত গীতা : https://bhagavadgitatutorial.blogspot.com
আপনারা আমার প্রণাম নেবেন |
ইতি
দীন ভক্ত দাসানুদাস
৩২) হে দেবর্ষি ! এই মহৎকার্য সম্পাদনের জন্য আপনি এক সৎকর্মের অনুষ্ঠান করুন । সেই কর্মের কথা সন্তশিরোমনি সাধুগণ আপনাকে বর্ণনা করবেন ।
৩৩) সেই সৎকর্মের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলেই জ্ঞান আর বৈরাগ্যের নিদ্রা এবং বৃদ্ধাবস্থা তৎক্ষণাৎ দূরীভূত হবে এবং সর্বত্র ভক্তির প্রচার হবে ।
৩৪) সেস্থলে উপস্থিত সকলেই এই দৈববাণী শুনতে পেলেন । নারদমুনি এই সব শ্রবণে বড়ই অবাক হলেন এবং আশ্চর্যপ্রকাশ করে বললেন - " এর তো কিছুই আমার সর্বতোভাবে বোধগম্য হল না । "
৩৫) নারদমুনি বললেন যে "এই দৈববানীও অতি গুহ্য এবং গোপনভাবে ব্যক্ত হয়েছে । কি প্রকার সাধন এর দ্বারা এই কার্য সম্পাদন হবে ,এই দৈববাণীতে তা ব্যক্ত হয়নি ।
৩৬) কে জানে সেই সকল সন্তশিরোমনি সাধুগণ কোথায় পাওয়া যাবে আর কি প্রকারেই বা তারা সেই সাধন প্রদান করবেন ? এই দৈববাণী অনুসারে এখন আমারই বা কি করণীয় ?
৩৭) সূত বললেন -হে শৌনক ! তারপর নারদমুনি জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে সেখানে রেখে দৈববাণী কর্তৃক উদ্ধৃত সাধনের খোঁজে প্রস্থান করলেন এবং তীর্থে তীর্থে গিয়ে কিংবা পথমধ্যে মুনীস্বরদের সাথে সাক্ষাৎ হলে তাদের সেই সাধনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন ।
৩৮) যদিও তার সেই প্রশ্ন সকলেই শুনলেন কিন্তু কেউই কোনোপ্রকার সদুত্তর দিতে অসমর্থ হলেন । কেউ বললেন ' এ অসাধ্য ' ; কেউ বললেন ' এর সঠিক বিবরণ দুঃসাধ্য ।' কেউ কেউ শুনে চুপ করে রইলেন , আবার কেউ কেউ নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে প্রস্থান করলেন ।
৩৯-৪০) সমস্ত ত্রিভুবনে এক আশ্চর্য হাহাকার পড়ে গেল । সকলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল - " বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, বারবার গীতাপাঠের দ্বারাও যখন জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে জাগানো গেল না তখন নিশ্চই আর কোনো অন্য উপায় নেই ।"
৪১) ' যা স্বয়ং যোগরাজ দেবর্ষি নারদও জানেন না , সাধারণ সংসারী মানুষ সে সাধনের ব্যাপারে কি ভাবে জানবে ? '
৪২) এই ভাবে যে যে মুনি ঋষির কাছে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো , তাঁরা সকলেই বিবেচনা করে উত্তর দিলেন "এই প্রশ্নের উত্তর বড়ই দুঃসাধ্য ।"
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
৪৪) সেই সময় তিনি সামনে শতকোটি সূর্যের সমান প্রভাময় সনকাদি মুনিস্বরদের দেখতে পেলেন । তাদের দর্শন করে দেবর্ষি নারদ এইরূপ বললেন ।
৪৫) নারদ বললেন - হে মহাত্মাগণ ! আজ আমার বহু ভাগ্যের ফলস্বরূপ আপনাদের সাথে মিলন হল । আপনারা দয়া করে আমাকে সেই সাধন সম্পর্কে শীঘ্রই বলুন ।
৪৬) আপনারা সকলেই মহাযোগী , বুদ্ধিমান এবং বিদ্বান । আপনারা পাঁচ বৎসরের বালকের সমান বলে অনুভূত হলেও আসলে আপনারা কিন্তু পূর্বপুরুষদেরও পূর্বজ ।
৪৭) আপনারা সর্বদাই বৈকুণ্ঠধামে বাস করেন , নিরন্তর হরিগুণগানে মগ্ন থেকে শ্রীভগবৎলীলারস আস্বাদন করে সর্বদা তাতেই মত্ত রয়েছেন এবং একমাত্র ভগবৎকথাই আপনাদের জীবনের আধার ।
৪৮) " হরি শরণম্ " অর্থাৎ ভগবানই আমার রক্ষক , এই মন্ত্র সর্বদাই আপনাদের মুখে রয়েছে , যার প্রভাবে কালপ্রেরিত জরাও আপনাদের স্পর্শমাত্র করতে পারে না ।
৪৯) পূরাকল্পে আপনাদের ভ্রূকুটি মাত্রে ভগবান বিষ্ণুর দ্বারপাল জয় আর বিজয় মুহূর্তের মধ্যে মর্ত্যে পতিত হয় আবার আপনাদেরই কৃপায় তারা পুনরায় বৈকুণ্ঠধাম প্রাপ্ত হন ।
৫০) অহো ! ধন্য আমি , অসীম সৌভাগ্যের ফলেই আজ আপনাদের দর্শন হল । আমি অতীব দীন আর আপনারা স্বভাববতই দয়ালু , সুতরাং আমার উপর আপনাদের অবশ্যই কৃপা করা উচিত ।
৫১) দৈববাণী যা আদেশ করেছেন সেই সাধনটি কি ? কি প্রকারেই বা আমি সেই সাধন সম্পাদন করব ? আপনারা সবিস্তারে সেই ব্যাপারে আমাকে সম্যকরূপে বলুন ।
৫২) ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্য - এদের কিভাবে সুখ প্রাপ্তি হবে ? আর কিভাবেই বা সমস্ত বর্ণের মধ্যে প্রীতি এবং যত্ন সহকারে এদের প্রতিষ্ঠা করা যায় ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
৫৩) সনকাদি মুনিগন বললেন - হে দেবর্ষি ! মনে হর্ষের সঞ্চার করুন , আপনি চিন্তা করবেন না , আপনি যাদের প্রসঙ্গ উদ্ধৃত করলেন, তাদের উদ্ধারহেতু এক অতি সহজ উপায় আগে থেকেই বিদ্যমান ।
৫৪) হে দেবর্ষি নারদ ! আপনি ধন্য ! আপনি বৈরাগীশ্রেষ্ট , পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রের দাসগণের আপনি শ্বাশত পথপ্রদর্শক এবং ভক্তিযোগের ভাস্কর ।
৫৫) পরমা মুক্তিপ্রদানকারী ভক্তির কষ্ট নিবারণের জন্য যে মহৎ উদ্যোগ আপনি করছেন , তা আপনার পক্ষে মোটেও আশ্চর্যজনক ব্যাপার নয়। ভক্তির সংস্থাপনাই তো ভাগবত ভক্তদের সর্বদা করা উচিত ।
৫৬) আর্য মুনি ঋষিগণ এই সংসারে আমাদের জন্য অনেকপ্রকার সাধনমার্গের দৃষ্টান্ত দিয়েছেন , কিন্তু সেই সবগুলিই নিদারুন কষ্টসাধ্য এবং প্রায়শই পরিণামস্বরূপ সেগুলি কেবলমাত্র স্বর্গপ্রাপ্তিরই সহায়ক হয় ।
৫৭) যে সাধনের দ্বারা স্বয়ং ভগবানকে পাওয়া যায় , তা আজ পর্যন্ত কেবল গুপ্তরূপেই থেকে গিয়েছে । কদাচিৎ অতি সৌভাগ্যের উদয় হলে সেই পরম সাধনের উপদেষ্টা পুরুষের প্রাপ্তি হয় ।
৫৮) যে সৎকর্মের ইঙ্গিত আপনি দৈববাণী দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছেন , আমরা এখন আপনাকে তার ব্যাপারে বলছি । আপনি তা অতি প্রসন্নমনে একাগ্রচিত্ত হয়ে শ্রবণ করুন ।
৫৯) হে দেবর্ষি নারদ ! দ্রব্যযজ্ঞ, তপোযজ্ঞ, যোগযজ্ঞ, এবং স্বাধ্যায়স্বরূপ জ্ঞানযজ্ঞ - এগুলির সবই কেবলমাত্র স্বর্গাদিলাভ হেতু কৃতকর্মের ইঙ্গিত বহনকারী ।
৬০) পণ্ডিতগণ স্বাধ্যায়স্বরূপ জ্ঞানযজ্ঞকেই মুক্তিপ্রদানকারী সৎকর্মের সূচকরূপে ব্যক্ত করেছেন । সেই সৎকর্ম হল ভক্তিভরে শ্রীমদ্ভাগবতের পারায়ণ অর্থাৎ নিয়মিত শ্রীমদ্ভাগবতপাঠের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থপাঠ-সমাপ্তি, যার সমাপন শুকদেবাদি মহানুভবগণ পূর্বে করে গিয়েছেন ।
৬১) অমৃত থেকেও উৎকৃষ্ট এই শ্রীমদ্ভগবত এর কর্ণপাত হওয়ামাত্রই ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্যের মহাশক্তি লাভ হবে । যার ফলে জ্ঞান আর বৈরাগ্যের ক্লেশের পরিসমাপ্তি হবে এবং ভক্তিও আনন্দিত হবেন ।
৬২) অরণ্যমধ্যে সিংহের গর্জন শ্রবণমাত্র যেমন নেকড়েরা পলায়ন করে , তেমনি শ্রীমদ্ভাগবতের সিংহনাদে এই ঘোর কলি যুগের সমস্ত দোষের প্রলয় ঘটবে ।
৬৩) তখন এই সংসারে প্রতিটি ঘরে প্রতিটি মানবের হৃদয়ে, প্রেমরসপ্রবাহিনী ভক্তি তার দুই পুত্র জ্ঞান আর বৈরাগ্য সহিত ক্রীড়া করবেন ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
৬৪) দেবর্ষি নারদ বললেন - বেদধ্বনি, বেদান্তঘোষ, এমনকি গীতাপাঠের মাধ্যমেও আমি জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে অনেকপ্রকারে জাগাবার চেষ্টা করেছি । কিন্তু এইসব সাধনের পরও জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে জাগানো সম্ভবপর হয়নি ।
৬৫) এমতাবস্থায় শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণের ফলে কিরূপে জেগে উঠবে ? কারণ শ্রীমদ্ভাগবতের প্রতিটি শ্লোক এবং প্রতিটি পদেই তো সেই বেদেরই সারাংশ বর্ণিত হয়েছে ।
৬৬) হে বালমুনিগন , আপনাদের দর্শন অতি দুষ্প্রাপ্য , যা কখনোই ব্যর্থ হয় না এবং আপনারা শরণাগতবৎসল । তাই আপনারা দয়া করে আমার মনের এই সংশয় দূরীভূত করুন ,দয়া করে বিলম্ব করবেন না ।
৬৭) সনকাদিমুনিগন বললেন - শ্রীমদ্ভাগবত বেদ আর উপনিষদেরই সারাংশ । তাই বেদ থেকে পৃথক এবং সাথে তার ফলস্বরূপ হওয়ার দরুন শ্রীমদ্ভাগবত পরম উত্তম বলে পরিগণিত হয় ।
৬৮) বৃক্ষের শিকড় থেকে শুরু করে শাখাপ্রশাখা রসে সিক্ত থাকে কিন্তু ওই অবস্থায় সেই রস আস্বাদন করা সম্ভবপর হয় না ; সেই রসই যখন বৃক্ষের ফলরূপে পরিণত হয় তখন তা সমগ্র সংসারের কাছে প্রিয় হয় ।
৬৯) ঘি তো থাকে দুধেরই মধ্যে, তথাপি দুধের মধ্যে ঘি এর পৃথক স্বাদ পাওয়া যায় না , কিন্তু দুধের থেকে সেই ঘি যখন পৃথক হয়ে যায় , তখন তা দেবতাদেরও স্বাদবর্ধনকারী হয় ।
৭০) শর্করা ইক্ষুর মধ্যে সর্বত্রই ব্যাপ্ত থাকে কিন্তু ইক্ষু থেকে প্রস্তুত শর্করা পৃথক এবং বিশেষরূপে আমাদের মিষ্টতা প্রদান করে থাকে । এই রকমই হল শ্রীমদ্ভাগবত কথা ।
৭১) এই শ্রীমদ্ভাগবতমহাপুরাণ বেদেরই সমান । ভগবানের কলাবতার শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস ভক্তি, জ্ঞান, এবং বৈরাগ্যের প্রতিষ্ঠার জন্যই ইহা প্রকাশিত করেছেন ।
শ্রীমদ্ভাগবতমাহাত্ম্যম্-দ্বিতীয় অধ্যায় |
৭২-৭৩) পুরাকালে বেদবেদান্ত পারঙ্গম এবং গীতশাস্ত্রকার মহর্ষি বেদব্যাস যখন একসময় দুঃখিত হয়ে অজ্ঞানময় অন্ধকারময় সমুদ্রে নিমগ্ন ছিলেন , তখন আপনিই তাঁকে কেবলমাত্র চারটি শ্লোকে এই শ্রীমদ্ভাগবতের উপদেশ দিয়েছিলেন । আপনার সেই উপদেশ শ্রবণেই তার সমস্ত চিন্তা দূরীভূত হয়েছিল ।
৭৪) সুতরাং আপনি এতে অবাকই হচ্ছেন কেন আর সংশয়ই বা কেন প্রকাশ করছেন ? হে দেবর্ষি নারদ ! আপনাকে ভক্তি, জ্ঞান আর বৈরাগ্যকে এই শোক এবং দুঃখ বিনাশকারী শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণই শ্রবন করানো উচিত ।
৭৫) তখন দেবর্ষি নারদ বললেন - হে মহানুভবগণ ! আপনাদের দর্শনমাত্র জীবের সমস্ত পাপ দূর হয় এবং দুঃখরূপী সংসার দাবানলে তাপিত ব্যক্তির উপর শীঘ্রই শান্তি বর্ষিত হয় । অনন্তনাগের সহস্রমুখনিঃসৃত শ্রীমদ্ভাগবত কথামৃত আপনারা সর্বদাই পান করেন । প্রেমলক্ষণা ভক্তির প্রকাশের উদ্দেশ্যহেতু আমি আপনাদের শ্রীচরণকমল আশ্রয় করছি ।
৭৬) মানুষের বহুজন্মের অর্জিত পুণ্যের উদয় হলে যখন সৎসঙ্গ লাভ হয় , তখন তার অজ্ঞানজনিত মোহ ও দৰ্পরূপ ( মদ/গর্ব ) অন্ধকারের নাশ হয়ে শুভ বিবেক জাগ্রত হয় ।
। ইতি শ্রীপদ্মপুরাণে উত্তরখণ্ডে শ্রীমদ্ভগবতমাহাত্ম্যে কুমারনারদসংবাদো নাম দ্বিতীয়োহধ্যায়ঃ।
আসুন আমরা সবাই একসাথে শ্রীমদ্ভাগবতম / শ্রীমদ্ ভাগবত মহাপুরাণের স্বাধ্যায় করে আমাদের জীবন পুন্য করি | আজকের মতো এইটুকুই, আমরা শেষ করব মহামন্ত্র দিয়ে |
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে |
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ||
যদি আপনার এই পোস্টটি পছন্দ হয়ে থাকে / ভালো লেগে থাকে নতুবা এখান থেকে কিছু নুতন জানতে পারেন তাহলে আমাদের সাবস্ক্রাইব অবশ্যই করবেন এবং আপন আত্মীয়পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন | আমার লেখা কেমন লাগলো তা অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে কমেন্ট করে জানাবেন |
শ্রীমদ্ ভগবত গীতার উপর আমাদের টিউটোরিয়াল / শিক্ষামূলক সিরিজ পড়ার জন্য এই লিংকটি ক্লিক করে শ্রীমদ ভগবত গীতার অমৃতজ্ঞান পান করে জীবন পবিত্র ও পুন্য করুন |
শ্রীমদ্ ভগবত গীতা : https://bhagavadgitatutorial.blogspot.com
আপনারা আমার প্রণাম নেবেন |
ইতি
দীন ভক্ত দাসানুদাস
<--পূর্ববর্তী লেখনী পরবর্তী লেখনী-->
No comments:
Post a Comment