শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2 - The Srimad Bhagavatam

পড়ুন


The Srimad Bhagavatam

Sunday, 12 April 2020

শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2

শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় , Srimad Bhagavatam - First Canto - Second Chapter , Bhagavatam,Srimad Bhagavatam, Bhagavata Purana, Srimad Bhagavatam in Bengali, Bhagavata Purana in Bengali, Bhagavata Mahapurana, Sanatana Dharma, Bhagavata Mahapurana, Srimad Bhagavatam Bangla, Gita, শ্রীমদ্ ভাগবতম, শ্রীমদ্ ভাগবত মহাপুরাণ , শ্রীমদ্ ভাগবত পুরাণ, Srimad Bhagavatam online, শ্রীমদ ভাগবত,ভাগবত মহাপুরাণ, ভগবৎকথা ও ভগবদ্ভক্তির মাহাত্ম্য

<--পূর্ববর্তী লেখনী                                                        পরবর্তী লেখনী-->

Srimad Bhagavatam Lord Vishnu

ভগবান শ্রীহরি

|| ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ||


শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায়

ভগবৎকথা ও ভগবদ্ভক্তির মাহাত্ম্য


প্রিয় ভক্তবৃন্দ এবং সুধীগণ,

পূর্ববর্তী লেখনীতে আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমের প্রথম স্কন্ধ - প্রথম অধ্যায় , সূতের কাছে শৌনকাদি মুনিগণের প্রশ্ন সম্পর্কে জেনেছিলাম । আজ আমরা শ্রীমদ্ভাগবতমের প্রথম স্কন্ধের দ্বিতীয় অধ্যায় , ভগবৎকথা ও ভগবদ্ভক্তির মাহাত্ম্য সম্পর্কে জানব । এটি শুরু হয় সূত গোস্বামী দ্বারা শৌনকাদি মুনিদের প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মাধ্যমে ।

শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2
শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায়
১) নৈমিষারণ্য ক্ষেত্রে শৌনকাদি মুনিগনদের প্রশ্ন শুনে রোমহর্ষণ পুত্র উগ্রশ্রবা ( সূত গোস্বামী ) বড়ই আনন্দিত হলেন । তিনি তাদের ওইসকল প্রশ্নের প্রশংসা করলেন এবং সেগুলির উত্তর দিতে শুরু করলেন ।

২) মহামতি সূত বললেন - আমি সর্বভূতহৃদয় মহর্ষি শ্রীশুকদেব গোস্বামীকে প্রণাম করছি । তখনও শ্রীল শুকদেবের যজ্ঞোপবিধ ( উপনয়ন ) সংস্কার হয়নি , অর্থাৎ তাঁর লৌকিক বা বৈদিক কর্মানুষ্ঠানের সুযোগ নেই । এমতাবস্থায় তিনি একাকীই সন্ন্যাস গ্রহণের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করে যাচ্ছিলেন । সেই সময় যখন তাঁর পিতা মহর্ষি বেদব্যাস পুত্রবিরহে কাতর হয়ে ' হে পুত্র !  হে পুত্র !' বলে আহ্বান করছিলেন , সেই সময় শ্রীশুকদেবের ভাবনায় তন্ময় বৃক্ষরাজিও বিরহকাতর পিতার ব্যাথায় ব্যথিত হয়ে উত্তর দিয়েছিল ।

৩) গভীর অজ্ঞানঅন্ধকারে নিমজ্জিত এই সংসার , এই ভবসাগর অতিক্রম করতে ইচ্ছুক বিষয়াসক্ত মানুষের জন্য এই ভাগবত মহাপুরাণ , আধ্যাত্মিক ও আত্মতত্ব প্রকাশক অনুপম দীপ সদৃশ । ইহা সমস্ত বেদের সারস্বরূপ , অত্যন্ত গুহ্য এবং ভগবতস্বরূপের দর্শনদানকারী । মহান মুনিঋষিগণও শ্রীল শুকদেবের চরণ আশ্রয় করে এই শুকশাস্ত্রের বর্ণনা করেছেন । আমি তাঁকে সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করে তাঁর শরণাশ্রয় গ্রহণ করছি ।

৪) ভবসাগর বিজয়ী শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ পাঠ করার পূর্বে ভগবান শ্রীনারায়ণ , ভগবত অবতার মানুষ্যশ্রেষ্ঠ নর-নারায়ণ ঋষিকে , বাণীদেবী সরস্বতী এবং মহর্ষি ব্যাসদেবকে প্রণাম করা উচিত ।

৫) হে ঋষিগণ ! আপনারা আমার সম্মুখে  অতি সুন্দর এবং উত্তম সব প্রশ্ন উপস্থাপন করেছেন । কারণ এই সকল প্রশ্নগুলি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিষয়ক ও জগতের পক্ষে মঙ্গলকারী । এই প্রকার প্রশ্নে আত্মা পূর্ণরূপে সুপ্রসন্ন হয় ।

৬) মানুষের পক্ষে পরম ধৰ্ম হল সেই ধর্ম যার দ্বারা ভৌতিক বা ইন্দ্রিয়লভ্য জ্ঞানের অতীত শ্রীকৃষ্ণের নিষ্কাম ( ফলভোগের বাসনা রহিত )  ও নিরবিচ্ছিন্ন ভগবদ্ভক্তি লাভ করা যায় । এই ভক্তিবলে আত্মা সচ্চিদানন্দ পরমাত্মার উপলব্ধি করার মাধ্যমে যথার্থ প্রসন্নতা লাভ করে ।

৭) অনন্যা ভক্তি সহকারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবার মাধ্যমে অচিরেই মনদর্পনে নিষ্কাম জ্ঞান ও বৈরাগ্যের আবির্ভাব হয় , যা এই জড়জাগতিক বিষয়ের প্রতি মনকে অনাসক্ত করে ।

৮) স্বকীয় বৃত্তি এবং স্বধর্ম পালনের পরও যদি মানুষ্যহৃদয়ে শ্রীভগবানের লীলাপ্রসঙ্গ অথবা মহিমা শ্রবণে প্রবৃত্তি না আসে তাহলে সেই সকল ধর্মকর্ম অনর্থক পরিশ্রম মাত্র ।

শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2
শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায়
৯) ধর্মপালন বা ধর্ম আচরণের উদ্দেশ্য হলো কেবল পরম মুক্তি লাভ করা । কখনই তা অর্থ উপার্জনের নিমিত্তে করা উচিত নয় । অর্থ কেবল ধর্মাচরণ বা ধর্মানুষ্ঠান সম্পাদন করার মাধ্যম হওয়া উচিত । যারা ধর্মাচরণকারী , তাদের  তত্ত্বদর্শী মহর্ষিগণ , ইন্দ্রিয় সুখভোগাদি ও জড়জাগতিক বিষয়ভোগে প্রত্যাশী না হওয়ার উপদেশ করেছেন ।

১০) ইন্দ্রিয় বিষয়ভোগকে কখনই জীবনের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য বলে বিবেচনা করা উচিত নয় । কেবলমাত্র জীবনধারণ বা জীবিকা নির্বাহের জন্যই বিষয়ের সাথে মানুষের নূন্যতম সংলিপ্ততা আবশ্যক । কারণ মানব জীবনের সর্বোপরি লক্ষ্য হল সেই পরমতত্বের অনুসন্ধান ।

১১) তত্ত্ববিদগণ সেই জ্ঞানকে , যা এক ও অদ্বিতীয় সচ্চিদানন্দস্বরূপ , পরমতত্ত্ব বা পারমার্থিক জ্ঞান বলে থাকেন । সেই তত্ত্বই আবার কখনো পরমব্রহ্ম , পরমাত্মা কখনো বা ভগবান , এই সকল বিভিন্ন নামে অভিহিত হন ।

১২) শ্রদ্ধালু ও দৃড় ভগবৎভক্ত মুনি-ঋষিগণ ঐকান্তিকভাবে শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণে প্রাপ্ত জ্ঞান -বৈরাগ্যসংযুক্ত ভক্তিকে নিজ হৃদয়ের মধ্যে ধারণ করে সেই পরমাত্মার অনুভব করেন ।

১৩) হে বিপ্রশ্রেষ্ঠ শৌনকাদি ঋষিগণ ! নিজ নিজ প্রবৃত্তি ও বর্ণাশ্রম ধৰ্ম পালনের মাধ্যমে ভগবান শ্রীহরির প্রীতি সম্পাদনই হল পরম সিদ্ধি ।

১৪) সুতরাং একাগ্রচিত্ত হয়ে নিত্যই ভক্তবৎসল পরমেশ্বর শ্রীভগবানের মহিমা শ্রবণ , কীর্তন , স্মরণ ও আরাধনা করা আবশ্যক ।

১৫) যথার্থ জ্ঞানী ও বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ শ্রীমদ্ভাগবত স্মরণরূপ অসির ( তরবারীর ) দ্বারা জাগতিক মোহ -মায়া ও কর্মবন্ধনের ছেদন করেন । সুতরাং সেই শ্রীভগবানের লীলাকথা শ্রবণে কার না অনুরাগ জন্মে !

১৬) হে ব্রাহ্মনশ্রেষ্ঠ শৌনকাদি ঋষিগণ ! শ্রীভগবানের শুদ্ধ ও একনিষ্ঠ ভক্তের সেবার দ্বারা পুণ্যফলের উদয় হয় এবং ভাগবত কথা শ্রবণের অভিলাষ জন্মে , অতঃপর ভাগবত কথাতে শ্রদ্ধার উদয় হয় এবং ক্রমে ক্রমে মনযোগ সহকারে ( স্থিরচিত্ত  হয়ে ) শ্রীমদ্ভাগবত কথাশ্রবণে আসক্তি আসে ।

১৭) পরম পুণ্যকারী পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র লীলা , মহিমার শ্রবণ কীর্তন করলে , নিত্য হিতকারী শ্রীভগবান ওই সাধুগণদের হৃদয়াভ্যন্তরে প্রকাশিত হয়ে সমস্ত অশুভ জড়জাগতিক বিষয় ভোগের কামনাবাসনাকে অবশ্যই বিনাশ করেন কারণ তিনি সাধুগণের সুহৃদ। 

১৮) নিত্য নিরন্তর ভগবৎভক্তদের সেবা করলে এবং স্থিরচিত্ত হয়ে শ্রীমদ্ভাগবতের শ্রবণ করলে হৃদয়ে ভক্তির প্রতিবন্ধকরূপ সমস্ত কলুষতা দূরীভূত হয় এবং উত্তম শ্লোকের দ্বারা শ্রীভগবানের বন্দনা করলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে প্রেমময়ী নিশ্চলা ভক্তিসুধা প্রগাড় হয় ।

1শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2
শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায়
১৯) যখন মনুষ্যহৃদয়ে পরমা ভক্তির সঞ্চার হয় তখন তার প্রভাবে রজ ও তমোগুণজাত কাম , ক্রোধ , লোভাদি ষড়রিপুর প্রভাব হ্রাস হয় ও হৃদয়ে সত্ত্ব  গুনের প্রসার হয় । যার প্রভাবে মন নির্মল ও প্রসন্ন হয় ।

২০) হৃদয়ে পরমা ভক্তির প্রকাশের ফলে প্রসন্নচিত্তে শ্রীভগবানের সেবা করলে হৃদয় পরম আনন্দে পূর্ণ হয় এবং জীব সর্বপ্রকার বন্ধনমুক্ত হয়ে ভগবত-বিজ্ঞান বা ভগবততত্ব উপলব্ধ করেন ।

২১) আত্মাতে পরমাত্মার স্বরূপ দর্শনের মাধ্যমে জীবের হৃদয় গ্রন্থি ছিন্ন হয় । তখন তাঁর সর্বপ্রকার সন্দেহ দূরীভূত হয় এবং তাঁর সকাম কর্মজ্ঞানের বিনাশ হয় ।

২২) সেই জন্য পরমার্থলাভে আগ্রহী পন্ডিতগণ চিরকালই নিত্য নিরন্তর পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রের ভক্তিভরে সেবা করে আসছেন , যার প্রভাবে আত্মপ্রসাদ লাভ হয় ।

২৩) প্রকৃতির গুণত্রয় যথা সত্ত্ব, রজ ও তমঃ কে আশ্রয় করে এবং এগুলির মধ্যে অধিষ্ঠান করে পরমেশ্বর ভগবান এই জড় জগতের সৃষ্টি , স্থিতি / পালন ও প্রলয়ের জন্য ব্রহ্মা , বিষ্ণু এবং মহেশ্বর - এই তিন রূপে প্রতিভাত হন । এই তিনটি গুনের মধ্যে সত্ত্বগুনজাত শ্রীহরির থেকে মানুষের পরম মঙ্গল হয়ে থাকে ।

২৪) যেমন পৃথিবীর (ভূমি বা মাটির ) বিকার হল কাষ্ঠ ( কাঠ ) , এর থেকে ধোঁয়া শ্রেয় ( কারণ ধোঁয়া গতিমান ) । অগ্নি তার থেকেও শ্রেয় কারণ অগ্নিতে আহুতি দিয়ে বৈদিক কর্মানুষ্ঠান সমাপনের মাধ্যমে সদগতি লাভ হয়ে থাকে, জ্ঞানলাভ হয়ে থাকে । তেমনই তমোগুন অপেক্ষা রজোগুণ শ্রেষ্ট এবং রজোগুন অপেক্ষা সত্ত্বগুন শ্রেষ্ঠ কারণ সত্ত্বগুনের দ্বারা পরমতত্ব বা ভগবতদর্শন সম্ভবপর হয় ।

২৫) ভগবতপ্রাপ্তির জন্য পুরাকালে মহাত্মাগণ, জড় জগতের মোহ মায়াদি বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে কেবল ত্রিগুণাতীত পরমেশ্বর ভগবানেরই আরাধনা করতেন । যারা সেই সকল মহাত্মাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন তারাও এই ভবসাগর অতিক্রম করবার যোগ্যতা অর্জন করেন ।

শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায় - Srimad Bhagavatam - First Canto - Chapter 2
শ্রীমদ্ভাগবতম - প্রথম স্কন্ধ - দ্বিতীয় অধ্যায়
২৬) যারা মুক্তি লাভের জন্য যত্নশীল তারা অবশ্যই সকলের প্রতি শ্রদ্ধাপরায়ন এবং বিনম্র । তথাপি তাঁরা ভয়ঙ্কর আকৃতি বিশিষ্ট দেব , দেবী , প্রজাপতি ইত্যাদির পূজা না করে কেবলমাত্র পরমেশ্বর ভগবান শ্রীনারায়ণের এবং তাঁর অংশাবতারগণেরই আরাধনা করেন ।

২৭) যারা রজোগুন্ এবং তমোগুণের অধীন , তারা স্বীয় প্রবৃত্তি অনুসারে পিতৃপুরুষ , ভুত, প্রজাপতি, বিভিন্ন দেব দেবীর পূজা করে কারণ তারা এই জড় জগতের বিভিন্ন ভোগ বাসনা , যেমন ঐশ্বর্য , ধনসম্পদ , শক্তি , স্ত্রী , সন্তান সন্ততি ইত্যাদির দ্বারা প্রভাবিত ।

২৮-২৯) বৈদিক জ্ঞানের পরম উদ্দেশ্য হলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ । যাগ-যজ্ঞ সম্পাদনও তাঁরই প্রীতির জন্য করা হয় এবং যোগ সম্পাদনের উদ্দেশ্যও হল তাকে জানা । সমস্ত কর্মের পরিসমাপ্তিও শ্রীকৃষ্ণই স্বয়ং কারণ তিনি সকল সকাম কর্মের ফলপ্রদান করেন । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য সমস্ত ধর্মকর্মাদির অনুষ্ঠান হয় এবং জীবের বিভিন্ন গতির কারণও হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ । তিনিই হলেন জীবনের পরম উদ্দেশ্য ।

৩০) ভগবান শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র হলেন ত্রিগুণাত্মিকা - অর্থাৎ সত্ত্ব, রজ ও তমঃ ,এই তিন গুনেরও অতীত । তবুও তিনি সর্বাগ্রে নিজের অমোঘ মায়াশক্তির প্রভাবে এই কার্য-কারণাত্মিকা , ত্রিগুণময়ী এই বিশ্ব-জগতের সৃষ্টি করেছিলেন ।

৩১) এই জড়জগৎ সৃষ্টির পর তিনি এর মধ্যে প্রবেশ করেন । তাই তিনি এই জড়-গুনসমূহের  মধ্যে প্রবিষ্ট আর প্রপঞ্চদৃষ্টিতে মনে হয় যে এই জড়জগতেই তার সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তিনি অনাদিরও আদি এবং চিন্ময় জ্ঞানের দ্বারা পূর্ণ জ্ঞানময় ।

৩২) অগ্নি তো কাষ্ঠের মধ্যেই নিহিত থাকে কিন্তু ব্যবহারের তারতম্য অনুসারে বিভিন্নরূপে প্রকাশিত হয় । ঠিক তেমনি পরমাত্মা অর্থাৎ পরমেশ্বর ভগবান সকল কিছুর মধ্যেই পরিব্যাপ্ত । তিনি এক এবং অদ্বিতীয়ম কিন্তু তিনি নিজ মায়াশক্তির প্রভাবে বিভিন্নরূপে  প্রতীয়মান হন ।

৩৩) পরমেশ্বর শ্রীভগবান তার মায়াশক্তির প্রভাবে নানাপ্রকার স্থূলশরীরের ( ভূত , ইন্দ্রিয়াদি , অন্তঃকরণ ইত্যাদির গুণ পরিবর্তনের মাধ্যমে ) নির্মাণ করেন এবং প্রকৃতিজাত গুনত্রয় আশ্রয় করে ভিন্ন ভিন্ন জীবদেহের রূপে প্রবিষ্ট হন । সূক্ষ্ম মন দ্বারা ঐসকল জীবগণকে তিনি গুণত্রয়ের প্রতিক্রিয়া ভোগ করান ।

৩৪) তিনি সম্পূর্ণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ও স্বামী । তিনি মনুষ্য , দেবতা , পশু-পক্ষী ইত্যাদি সমস্তকিছুর প্রতিপালন করেন । এইসব বিভিন্ন স্থূলশরীরে তিনি বিভিন্ন অবতার গ্রহণপূর্বক সত্ত্বগুনের দ্বারা জীবের প্রতিপালন করে থাকেন ।

। ইতি শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীমহাপুরাণে পারমহংস্যাং সংহিতায়াং প্রথমস্কন্ধে নৈমিষীয়োপাখ্যানে দ্বিতীয়োহধ্যায়ঃ।

আসুন আমরা সবাই একসাথে শ্রীমদ্ভাগবতম / শ্রীমদ্ ভাগবত মহাপুরাণের স্বাধ্যায় করে আমাদের জীবন পুন্য করি | আজকের মতো এইটুকুই,আমরা শেষ করব মহামন্ত্র দিয়ে |

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে  |

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে  ||

 

যদি আপনার এই পোস্টটি পছন্দ হয়ে থাকে / ভালো লেগে থাকে নতুবা এখান থেকে কিছু নুতন জানতে পারেন তাহলে আমাদের সাবস্ক্রাইব অবশ্যই করবেন এবং আপন আত্মীয়পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন | আমার লেখা কেমন লাগলো তা অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে কমেন্ট করে জানাবেন |

শ্রীমদ্ ভগবত গীতার উপর আমাদের টিউটোরিয়াল / শিক্ষামূলক সিরিজ পড়ার জন্য এই লিংকটি ক্লিক করে শ্রীমদ ভগবত গীতার অমৃতজ্ঞান পান করে জীবন পবিত্র ও পুন্য করুন |

শ্রীমদ্ ভগবত গীতা : https://bhagavadgitatutorial.blogspot.com

আপনারা আমার প্রণাম নেবেন | 

ইতি
দীন ভক্ত দাসানুদাস

<--পূর্ববর্তী লেখনী                                                        পরবর্তী লেখনী-->

2 comments:

  1. সুন্দর প্রয়াস। অসংখ্য ধন্যবাদ।

    ReplyDelete